নিজস্ব প্রতিবেদন ২৬ অক্টোবার ২০২৪ ১১:১১ এ.এম
রাজধানীর দুই নগর ভবনের খাতা-কলমে ঢাকা এখন তিলোত্তমা নগরী। বাস্তবে দখল-দূষণে মৃতপ্রায়। উন্নয়নের নামে খানাখন্দে ভরপুর রাস্তাঘাট। খাল, খাসজমি দখল করে বড় বড় ভবন নির্মাণ। গত দেড় দশকে মেয়ররা ঢাকাকে ব্যবহার করেছেন পারিবারিক সম্পত্তির মতো। আত্মীয়স্বজনের অবাধ চাঁদাবাজি, ঠিকাদারি কাজের নামে লুটপাট, উন্নয়ন কাজে কমিশন, নিয়োগ-বাণিজ্যের মতো ঘটনা ছিল অনেকটা ওপেন সিক্রেট। নগর ভবনের কর্তা মেয়ররা জনগণের ট্যাক্সের টাকা নিয়েও করেছেন নানা ছেলেখেলা। উদ্ভট উদ্ভট ধারণা নিয়ে সেগুলো পরীক্ষা করার জন্য বেছে নিতেন রাজধানীকে। এমন নানা বাহানায় বছর বছর শত শত কোটি টাকা গচ্চা গেলেও জবাবদিহি ছিল না। মশানিধন, যানজট নিরসন, ট্রাফিক আধুনিকায়ন, সৌন্দর্যবর্ধনে পরীক্ষামূলক প্রকল্প হাতে নিয়েও গচ্চা দিয়েছেন অন্তত কয়েক হাজার কোটি টাকা। তবে এসব প্রকল্প থেকে মেয়র এবং তাদের স্বজন হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ। গত দেড় দশকে রাজধানী বসবাসের অযোগ্য শহরের তালিকায় ওপরের দিকে উঠলেও ভাগ্য বদলেছে দায়িত্ব পালন করা মেয়র এবং তাদের স্বজনের।
শেখ ফজলে নূর তাপস: ২০২০ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদে দায়িত্ব নিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের ঘোষণা দেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। এরপর সংস্থাটির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান ও প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরদারকে দুর্নীতির দায়ে চাকরিচ্যুত করেন। নিজের আধিপত্য বিস্তারে অসংখ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দুর্নীতির দায়ে চাকরিচ্যুত করেন তিনি। মেয়র থাকাকালে তার স্বৈরাচারী শাসন, শোষণ, অপকর্ম ও দুর্নীতি নিয়ে টুঁ শব্দটি করার সাহস পাননি কেউ। মন্ত্রীদের অনেককেও ধমক দিয়ে, তাচ্ছিল্য করে কথা বলতেন। সরকারি অন্য দপ্তরের প্রধানদের হুমকি দিতেন প্রায়ই।
ডিএসসিসির কর্মকর্তারা বলেন, শেখ তাপসের আচরণ ছিল স্বৈরাচারী ও হিংসাত্মক। সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন যেসব উদ্যোগ নিয়েছিলেন, সেসব বন্ধ করে দেন তাপস। অনেক মার্কেটের উন্নয়ন কাজ অসমাপ্ত অবস্থায় ফেলে রাখা হয়। এতে সিটি করপোরেশনের কয়েক হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তাপসের হুকুম ছাড়া করপোরেশনের কোনো কাজই হতো না। দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিক নিয়োগ থেকে শুরু করে টেন্ডার, দোকান বরাদ্দ, উন্নয়ন প্রকল্প, উচ্ছেদ অভিযান—যাই ঘটুক, সব কিছুতেই তার অনুমতি লাগত। অনেক ফাইল প্রধান নির্বাহী পর্যন্ত গেলেই নিষ্পত্তি হওয়ার কথা; কিন্তু তিনি সেটা মানতেন না। শ্রমিক নিয়োগের তালিকায়ও তার পছন্দের বাইরে কাউকে রাখতেন না। শেখ পরিবারের সদস্য হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কথা বলার মতো সাহস দেখাতেন না কেউ। দক্ষিণ সিটিতে ছিল তাপসের রাজার শাসন।
ডিএসসিসির স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী মো. শরিফ হোসেন বলেন, মেয়র তাপস টাকা খেয়ে অনেক লোকের চাকরি দিয়েছেন। তিনি সবসময় হিংসাত্মক মনোভাব পোষণ করতেন। আগের মেয়র সাঈদ খোকন দক্ষ-অদক্ষ লোক হিসেবে ১ হাজার ২৭০ জনকে চাকরি দিয়েছিলেন। মেয়র তাপস আসার পর শুধু সাঈদ খোকন চাকরি দেওয়ার কারণে ৯০০ লোকের চাকরি খেয়ে ফেলেন। পরে নিজে ৪০০ লোকের চাকরি দিয়েছেন। শরিফ বলেন, স্থায়ী ৪৪ জনের চাকরিও খেয়েছেন তাপস। নিজে সরাসরি কোনো টাকা লেনদেন না করলেও তার মূল কাজ করে দিতেন সচিব আকরামুজ্জামান। ঠিকাদারি কাজের পার্সেন্টেজ লেনদেন হতো সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমানের মাধ্যমে। আশিক দেশে কোনো লেনদেন করতেন না। সবসময় সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ায় বসে লেনদেন করতেন।
তাপস মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই মধুমতি ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করে ডিএসসিসি। ব্যাংকটির অন্যতম বড় শেয়ারহোল্ডার তাপস। ডিএসসিসির আর্থিক ফান্ড, ট্রেড লাইসেন্স, হোল্ডিং ট্যাক্সসহ সব ধরনের লেনদেন মধুমতি ব্যাংকে স্থানান্তর করা হয়। ডিএসসিসির স্থায়ী আমানত ৫০০ কোটি টাকা এফডিআর হিসেবে মধুমতি ব্যাংকে স্থানান্তর করা হয়। চার খাল সংস্কার প্রকল্পের ৮৭৬ কোটি, শাহবাগ শিশু পার্কের উন্নয়ন কাজের ৬০৩ কোটিসহ কয়েকটি প্রকল্পের প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ব্যাংকটিতে জমা রয়েছে।
হস্তক্ষেপ ছিল। মেয়র সাঈদ খোকনের বন্ধু পরিচয়ে দাপিয়ে বেড়াতেন। তাদের দাপটে কাজ পেতেন না সাধারণ ঠিকাদাররা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নোয়াব এন্টারপ্রাইজের মালিক আমিনুল ইসলাম বিপ্লব কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের নেতা। একই থানা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ছিলেন জিহান কনস্ট্রাকশন ও এইচপিজে ঠিকাদারি ফার্মের মালিক জসিমউদ্দিন সবুজ। এ দুই ঠিকাদার কয়েকশ কোটি টাকার কাজ করেছেন।
ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত সিকদার জেএসএমসিডব্লিউ বিডি কনস্ট্রাকশনের মাধ্যমে করপোরেশনের নতুন চার ইউনিয়নে উন্নয়ন প্রকল্প, ত্রিমুখী প্রকল্প, ফাইভ জোন প্রজেক্ট, ফ্লাইওভারের নিচে বিশেষ প্রকল্পসহ আনুমানিক দেড়শ থেকে দুইশ কোটি টাকার কাজ করেছেন। খোকনকে ম্যানেজ করে সাবেক এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন অন্তত ৩০০ কোটি টাকার কাজ করেছেন।
ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের হাজার কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ রয়েছে সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে। আট উদ্যোক্তা পরিচালককে সরিয়ে স্ত্রী, বোন, ভগ্নিপতিসহ পরিবারের ৮ সদস্যকে করেছেন এর পরিচালক। এভাবেই তিনি প্রতিষ্ঠানকে কুক্ষিগত করে হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছেন বলে বিতাড়িত পরিচালকরা অভিযোগ করেছেন।
ডিএসসিসির সাবেক মেয়র ও ঢাকা-৬ আসনের সাবেক এমপি সাঈদ খোকন ২০১২ সালে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে আগের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেনকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে নিজেই ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত হন। দীর্ঘ ১২ বছর নির্বাচন ছাড়াই বেআইনিভাবে তিনি এ পদে বহাল থেকে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মে জড়িয়েছেন।
এসব কাজে তাকে সহযোগিতা করছেন কোম্পানির সিইও মো. আব্দুল খালেক মিয়া, সিএফও মো. মঈনুল আহছান চৌধুরী (সোনার বাংলা ও তাকাফুল ইন্স্যুরেন্স থেকে দুর্নীতি ও অর্থ কেলেঙ্কারির দায়ে বহিষ্কৃত) এবং কোম্পানি সচিব চৌধুরী এহসানুল হক। সাঈদ খোকন কোনো নির্বাচন বা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই চাচা মো. ইসমাইল নওয়াবকে প্রতিষ্ঠানের ভাইস চেয়ারম্যান পদে বসিয়েছেন। সেখানে কোনো কমিটিও গঠন করা হয়নি। নিয়ন্ত্রক সংস্থার বাধ্যবাধকতার কারণে যা করা হয়েছে, তা হয়েছে শুধু কাগজে-কলমে এবং চেয়ারম্যান সাঈদ খোকনের নির্দেশনায়।
মেয়র হওয়ার আগে সাঈদ খোকনের বার্ষিক আয় ছিল ৪১ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। গত সংসদ নির্বাচনের আগে তা দাঁড়ায় ১১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। হলফনামা অনুযায়ী, ৮ বছরের ব্যবধানে তার আয় বেড়েছে ২৭ গুণের বেশি।
১৪ দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা
প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে ২ বছরের কারাদণ্ড
গুমের ঘটনা তদন্তে জাতিসংঘের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা
পর্যবেক্ষক নীতিমালা চূড়ান্ত, ‘ভুয়া’ সংস্থাকে নিবন্ধন নয়: ইসি
ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠকে রাজনীতিতে স্বস্তির পরিবেশ ফিরেছে
দুপুরের মধ্যে যেসব জেলায় ঝড়ের আভাস
দশ দিনের ছুটি শেষে আজ খুলছে সরকারি অফিস
বিএনপিও ছাড় দিয়েছে, কিন্তু কেন?
দিল্লিতে গোপন সাক্ষাৎকারে জয়কে জড়িয়ে ধরে কাঁদলেন শেখ হাসিনা
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর যুক্তরাজ্যের সম্পত্তি জব্দ
পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে বাংলাদেশকে সমর্থন যুক্তরাজ্যের
ঘেউ ঘেউ করার জন্য মাত্র ২০টা লোক পাইলো: শফিকুল আলমের স্ট্যাটাস
এনসিপির ক্রাউডফান্ডিংয়ে প্রায় ১৪ লাখ টাকা অনুদান সংগ্রহ
চাঁদের মাটিতে পা রাখতে যাচ্ছেন প্রথম বাংলাদেশি নারী
টিউলিপের চিঠি পেয়েছি : প্রেস সচিব
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এয়ারবাসের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎ
বিএনপির হাতে ১২৩ খুন, মির্জা ফখরুলের ভিন্নমত পোষণ
টিউলিপের সাক্ষাতের আবেদন নাকচ ড. ইউনূসের
ভারতে নিহত সাবেক এমপি আনারের কোটি টাকার গাড়ি মিলল কুষ্টিয়ায়
খালেদা জিয়ার হস্তক্ষেপে প্রধান উপদেষ্টার বিষয়ে বিএনপির অবস্থান বদল
আব্দুল হামিদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট না থাকায় গ্রেপ্তার করা হয়নি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আজ থেকে যমুনা ও সচিবালয়ের আশপাশে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ
ড. ইউনূসের সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ কামনায় মোদি
ভারত কখনোই প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রাখতে চায় না: রিজভী
ঈদের ফিরতি যাত্রায় সবাইকে মাস্ক পরার অনুরোধ
সৌদির ওয়ার্ক ও ওমরাহ ভিসা সাময়িকভাবে স্থগিত
বাংলাদেশে যেভাবে গরু কোরবানি মুসলিম সংস্কৃতির অংশ হলো
ঢাকা উত্তরের ৮৫ শতাংশ বর্জ্য অপসারণ শেষ
৩৫ হাজার মানুষের পরিশ্রমে পরিচ্ছন্ন সব সিটি কর্পোরেশন: আসিফ মাহমুদ
ড. ইউনূসের অপেক্ষায় ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস