নিজস্ব প্রতিবেদন ১৬ জানু ২০২৫ ০৮:২৮ এ.এম
দুর্নীতি দমন কমিশনকে ‘স্বাধীন’ ও ‘সাংবিধানিক’ স্বীকৃতি দেওয়াসহ সংস্থাটির সংস্কারে ৪৭টি সুপারিশ করেছে দুদক সংস্কারে গঠিত দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন একটি দল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসে হাতে এ প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন। পরে বিকেলে ধানমন্ডির টিআইবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ও টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
প্রতিবেদনে দুর্নীতি দমন কমিশনের কাঠামোতে মৌলিক পরিবর্তনের সুপারিশ রাখা হয়েছে।
সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে দুদককে একটি ‘কার্যকর’ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেব গড়ে তুলতে এবং প্রতিষ্ঠানটির আমূল সংস্কারে ৩৭ সুপারিশের পাশাপাশি ক্ষমতার অপব্যবহার, আইন পরিবর্তনসহ ১০টি রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন।
সংস্কার কমিশন মনে করে, দুর্নীতি প্রতিরোধ দুদকের একার কাজ নয়। দুর্নীতি নির্মূলে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ জরুরি। দুদকের রাজনৈতিক, আমলাতান্ত্রিক প্রভাব ও সংস্থাটির অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি, অনিয়ম যে ধরনের অনাচার রয়েছে সেগুলো দূর করতে টাস্কফোর্স গঠন করার সুপারিশ করছে।
রাজনৈতিক ও আমলাতিন্ত্রকসহ বিভিন্ন প্রভাবের কারণে দুদকে পেশাগত বৈষম্য দূর করতে সুনির্দিষ্ট কিছু সুপারিশ রয়েছে সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে।
সংস্কার কমিশন জানিয়েছে, তারা যে সুপারিশ করেছে সেগুলো তিনভাবে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। এই সুপারিশগুলোর মধ্যে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। স্বল্প মেয়াদীগুলেরা ছয় মাসে বাস্তবায়নযোগ্য, আর মধ্য মেয়াদীগুলো ১৮ মাসে বাস্তবায়ন যোগ্য ও দীর্ঘ মেয়াদিগুলো ৪৮ মাসে বা চার বছরে বাস্তবায়ন করা সম্ভব বলে জানানো হয়।
সংস্কার কমিশনের যত সুপারিশ
দুদকের সার্বিক কার্যক্রম বিশেষত অভিযোগ ব্যবস্থাপনা, তদন্ত, গোপন অনুসন্ধান ও প্রসিকিউশন সংক্রান্ত কার্যাদি এন্ড-টু-এন্ড অটোমেশনের আওতায় আনা, ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা দুদকের নিজস্ব প্রশিক্ষণ একাডেমি স্থাপন করা।
এছাড়া বিতর্কিত দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৫৪(২) বিলুপ্ত করা, দুদকের নিজস্ব তহবিলের (ফান্ড) ব্যবস্থা করা, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আর্থিক প্রণোদনা বা পারফরম্যান্স বোনাস দেওয়া, নিজস্ব বেতন কাঠামোর তৈরি করার সুপারিশ করা হয়েছে।
সংস্থাটির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করতে সরকারের সহযোগিতায় বিভিন্ন তদন্ত বা গোয়েন্দা এজেন্সির সমন্বয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠন করার সুপারিশ করা হয়েছে। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চিহ্নিত করা, বিভাগীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে চাকরি থেকে বহিষ্কার করে ফৌজদারি বিচারে সোপর্দ করার সুপারিশ করা হয়েছে।
দুদকের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি দমন কমিটি বিলুপ্ত করে একটি স্বতন্ত্র অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা অনুবিভাগ গঠন করা, পরিচালিত প্রতিরোধমূলক কার্যক্রমের সাফল্য ও ব্যর্থতার নিরপেক্ষ মূল্যায়ন করে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় দুদককে একটি দুর্নীতি প্রতিরোধী কর্মকৌশল প্রণয়ন করতে হবে। সে অনুযায়ী স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়েছে।
দুদকের চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে সাধারণ কর্মকর্তা পর্যন্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট মানদণ্ড অনুসরণের সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। কমিশনারদের যোগ্যতার ক্ষেত্রে বর্তমানে আইন পেশা, শিক্ষা, প্রশাসন, বিচার বিভাগ বা শৃঙ্খলা বাহিনীতে ন্যূনতম ২০ বছরের অভিজ্ঞতার কথা বলা রয়েছে।
এছাড়া অতি উচ্চমাত্রার দুর্নীতি বা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের দুর্নীতি, বিশেষত অর্থ পাচার তদন্তের ক্ষেত্রে দুদক কর্তৃক প্রতিটি অভিযোগের জন্য দুদকের নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন এজেন্সির উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে আলাদা টাস্কফোর্স গঠন করা, আয়কর আইন, ২০২৩-এর ধারা ৩০৯ সংশোধন করার কথা বলা হয়েছে।
দুদকের মহাপরিচালকের সংখ্যা ৮ থেকে ১২ -তে উন্নীত করে তাদের অধীনে নিম্নোক্ত ১২টি অনুবিভাগ গঠন করা উচিত বলে মনে করে কমিশন। সেগুলো হলো (১) প্রশাসন, অর্থ ও মানবসম্পদ (২) প্রতিরোধ ও গণযোগাযোগ (৩) তথ্য প্রযুক্তি (৪) প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও উন্নয়ন (৫) লিগ্যাল ও প্রসিকিউশন (৬) তদন্ত-১ (৭) তদন্ত-২, (৮) বিশেষ তদন্ত (৯) মানিলন্ডারিং (১০) গোপন অনুসন্ধান-১ (১১) গোপন অনুসন্ধান-২ এবং (১২) অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা।
বর্তমানে শূন্য পদসমূহে অবিলম্বে নিয়োগের ব্যবস্থা করা, দেশের প্রতিটি জেলায় পর্যায়ক্রমে পর্যাপ্ত লজিস্টিক সক্ষমতাসহ দুদকের জেলা কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করার সুপারিশ করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক ও উন্মুক্ত প্রক্রিয়ায় সচিব নিয়োগের বিধান করা, মহাপরিচালক ও পরিচালক পদসমূহের (প্রেষণে বদলির মাধ্যমে নিযুক্ত মহাপরিচালক ও পরিচালক ব্যতীত) সব নিয়োগ বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক ও উন্মুক্ত প্রক্রিয়ায় করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে উল্লিখিত স্থায়ী প্রসিকিউশন ইউনিট গঠনের জন্য অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সুপারিশে।
কমিশন গঠনে দুদক আইনে সার্চ কমিটির কথা বলা রয়েছে সেটি পরিবর্তন করে ‘বাছাই এবং পর্যবেক্ষক কমিটি’ করার সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন। এই কমিটি পাশাপাশি কমিশন কী কাজ করছে তা ৬ মাস পরপর পর্যবেক্ষণ করবে। এটার জন্য সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিও প্রতিবেদনে সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন।
দুদক কমিশন গঠনে বিতর্কিত ‘সার্চ কমিটি ও দলীয় রাজনৈতিক বিবেচনা এড়াতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বাদ দিয়ে সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ তিনি হবেন বাছাই কমিটির প্রধান। হাই কোর্টের সবেচেয়ে জ্যেষ্ঠ একজন সদস্য হবেন। মহা হিসাব নিরীক্ষক, পাবলিক সার্ভিস কমিশন থেকে একজন, সংসদ নেতা থেকে মনোনীত একজন সদস্য ও প্রধান বিরোধি দলীয় নেতা থেকে মনোনীত একজন সদস্য থাকবেন।
কমিশন গঠন প্রক্রিয়া উন্মুক্ত করার প্রস্তাব সংস্কার কমিশনের
দুদক কমিশন গঠনের বিষয়টি এতোদিন গোপন থাকলেও এবার এটা সবার জন্য উন্মুক্ত করার সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন।
এক্ষেত্রে সংস্কার কমিশন তিনটি পদ্ধতির সুপারিশ করেছে, প্রথমটি হলো অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ‘শর্ত পূরণ’ সাপেক্ষে যে কেউ চাইলে কমিশনার থেকে আবেদন করতে পারেবন বা ইছা প্রকাশ করতে পারেবন। দ্বিতীয়টি হলো—‘বাছাই ও পর্যবেক্ষক’ কমিটি চাইলে বাছাই করে প্রার্থী তালিকা তৈরি করতে পারে। তৃতীয়টি হলো কেউ কাউকে চাইলে মনোনীত করতে পারে।
প্রাথমিক তালিকা থেকে প্রতিটি শূন্য পদের বিপররীতে তিন জন করে ১৫ জন বাছাই করবে কমিটি। পরে এই নামগুলো এক সপ্তাহের জন্য পাবলিক করে দেওয়া হবে। এক সপ্তাহ পর সেই তালিকা থেকে ১০ জনকে বাছাই করা হবে। রাষ্ট্রপতির কাছে ১০ জনের তালিকা দেবে। এরপর সেই ১০ জনের নাম আর প্রকাশ করবে না। সেখান থেকে রাষ্ট্রপতি পাঁচজনকে নিয়োগ দেবেন।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে দুই ধাপে মোট ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। এর মধ্যে গত অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে গঠন করা হয় নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, জনপ্রশাসন ও সংবিধান সংস্কারে কমিশন।
চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে এ কমিশনগুলোর প্রতিবেদন দেওয়ার কথা ছিল। তবে কাজ শেষ না হওয়ায় ৩ জানুয়ারি প্রতিবেদন দেওয়ার সময় বাড়ানো হয়।
এর মধ্যে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের জন্য ৩১ জানুয়ারি এবং বাকি পাঁচটি কমিশনকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছিল। এর মধ্যে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন দিতে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় চেয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে গঠন করা কমিশনগুলোর প্রতিবেদন আগামী মাসের শেষের দিকে দেওয়ার কথা।
‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদের স্ত্রীকে সাত দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যা, ১১ আসামির জামিন খারিজ
রাজউকের প্লট দুর্নীতি/ শেখ হাসিনা-পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ১৬ কোটি টাকা ফ্রিজ
রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা : ৪ আসামি ট্রাইব্যুনালে
সাবেক এমপি আফজাল ফের ৭ দিনের রিমান্ডে
ঘুষ নেওয়া এসির বাতাস খাওয়া সেই ওসি প্রত্যাহার!
অস্ত্র মামলায় ছাত্রলীগ নেতার ১৪ বছরের কারাদণ্ড
প্রতারণার আরেক মামলা ইভ্যালির রাসেল-শামীমার তিন বছরের কারাদণ্ড
জুলাই আন্দোলনের নারীদের ভূয়সী প্রশংসা মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের
সাইবার ট্রাইব্যুনালে হওয়া ৪১০টি মামলা প্রত্যাহার
পলক ফের ৪ দিনের রিমান্ডে
অবৈধ সম্পদ অর্জন স্বাস্থ্যের সাবেক গাড়িচালক মালেকের ১৩ বছরের কারাদণ্ড
পদ্মা নদীর বালু লুট : আদালতের স্বপ্রণোদিত আদেশে তদন্তে পিবিআই
ঢাবির ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হাইকোর্টে স্থগিত
আনিসুল-ইনু-মেনন-দীপু-সাদেক ফের রিমান্ডে
ওএমএস পণ্য জালিয়াতি : ডিলারকে এক মাসের কারাদণ্ড
Negotiable Instrument Cases: Challenges and Solutions for Bangladeshi MFIs
১৭ বছর পর কারামুক্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর
সংস্কার প্রতিবেদন দাখিল/সাংবিধানিক ও স্বাধীন দুদক গড়তে ৪৭ সুপারিশ
ভারত থেকে অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি নিষিদ্ধে আইনি নোটিশ
পি কে হালদারের ৫ সহযোগীর ৩১টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
অন্তর্বর্তী সরকারই তত্ত্বাবধায়কে রূপান্তরিত হতে পারে: অ্যাটর্নি জেনারেল
বঙ্গমাতা সাংস্কৃতিক জোটের নেত্রীসহ দুইজন কারাগারে
পালিয়ে ভারত গিয়ে ধর্ষণ, আওয়ামী লীগের ৪ নেতা গ্রেপ্তার
হাইকোর্টে শমী কায়সারের জামিন আবেদন
আইনজীবী সাইফুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি ৭ দিনের রিমান্ডে
পিরোজপুরে যুব মহিলা লীগ নেত্রী গ্রেফতার
মুন্নী সাহার স্থগিত ব্যাংক হিসাবে মাত্র ১৪ কোটি টাকা
রাজধানীতে চুরির স্বর্ণ-টাকাসহ চালক গ্রেফতার