মঙ্গলবার ১৪ অক্টোবার ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বঙ্গাব্দ
আইন

‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত, ৮ বছর পর হত্যা মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদন ২৭ সেপ্টেম্বার ২০২৪ ১১:১৮ পি.এম

‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত,  ৮ বছর পর হত্যা মামলা ছবি: সংগৃহীত

বরিশালের মুলাদীতে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগে ৮ বছর পর মামলা হয়েছে। মামলার বাদীর অভিযোগ, প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া হলেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ভয়ে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপন করায় তখন মামলা করতে পারেননি।

 

তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, সলিমের আতঙ্ক শুধু মুলাদীতে নয়, আশপাশের এলাকায়ও ছিল। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা, ডাকাতিসহ একাধিক মামলা ছিল। ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হাওয়ার আগে তাকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল। এছাড়া এর আগেও ২০১৬ মামলা করা হয়েছিল তবে তা মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন হওয়ায় খারিজ করে দেওয়া হয়।

সর্বশেষ আদালতে দাখিল করা এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বরিশালের মুলাদীতে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির কর্মী সলিম হাওলাদার হত্যার অভিযোগে আট বছরের অধিক সময় পর অজ্ঞাত নামধারীসহ ৩৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগে আনা হয়েছে। যে অভিযোগে গত ১৯ সেপ্টেম্বর বরিশালের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে নালিশি মামলা করেন নিহতের ভাই মোস্তফা হাওলাদার। জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সুমাইয়া রেজবী মৌরি নালিশি অভিযোগ এজাহার হিসেবে রুজু করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য মুলাদী থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. ফেরদৌস।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে মুলাদী উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বীকে সমর্থন করে বিএনপি কর্মী সলিম হাওলাদার। এতে এলাকার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়। নির্বাচনের পর ২০১৬ সালের ১ জুন সলিম ঢাকা থেকে নিজ গ্রামে আসে। সফিপুর লঞ্চঘাট থেকে সকালে বাড়ি ফেরার পথে সফিপুর গ্রামের ৪০-৪৫জন দুর্বৃত্ত তার ওপর হামলা করে। পরে সলিমকে কুপিয়ে ও গুলি করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে চলে যায়। পথচারীরা সলিমকে উদ্ধার করে মুলাদী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

যদিও তৎকালীন মুলাদী ওসি মতিউর রহমানের গণমাধ্যমে প্রকাশিত বক্তব্যের সূত্র বলছে, র‌্যাব-১০ এর একটি দল মঙ্গলবার (২০১৬ সালের ৩১ ম) ভোরে ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন খোলামোড়া বাজার থেকে সলিমকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর ঢাকা থেকে সলিমকে মুলাদীতে নিয়ে আসা হয়। পরদিন বুধবার ভোর পৌনে ৩টার দিকে সলিমের স্বীকারোক্তি মতে উত্তর পাতারচর এলাকায় অস্ত্র উদ্ধারে গেলে তার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছুঁড়ে। এক পর্যায়ে গোলাগুলি বন্ধ হয়ে গেলে সলিমের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।

সেখান থেকে পাইপগান, গুলি ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এ সময় পুলিশেরএসআই ফারুক হোসেন, এসআই কমল ও কনস্টেবল পারভেজসহ ৩ জন আহত হন। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে মোস্তফা হাওলাদার গণমাধ্যমকে জানান, ইউপি নির্বাচনের জেরে বন্দুকযুদ্ধের নামে সলিমকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া হয়েছিল। ঘটনার পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ভয়ে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপন করায় মামলা করতে পারেননি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাড়ি ফিরেছেন এবং আদালতে ভাই হত্যার মামলা করেন।

তবে মামলার বাদীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকায় সে আত্মগোপেন ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ও মামলার অভিযুক্তরা। সে সঙ্গে যারা আসামি হয়েছেন তাদের অনেকেই কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না থেকে চাকরিসহ বিভিন্ন পেশায় রয়েছেন।

মামলায় অভিযুক্তদের স্বজন ইব্রাহিম, ইমরানসহ স্বজনরা জানিয়েছেন, সলিমের বিরুদ্ধে বরিশাল, মাদারীপুর, শরিয়তপুরসহ একাধিক থানায় মামলা থাকায় এ আত্মগোপনে ছিল। তাকে ধরিয়ে দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে পুরস্কার ঘোষণাসহ নানান উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়েছিল। এরপর সে র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয় এবং  বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। আর এতবছর বিষয়টিকে ভিন্নখাতে নিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে মাঠে নেমেছে সলিমের স্বজনরা। এখন তারা দাবি করছে সলিম বিএনপির কর্মী আর সলিমকে হত্যা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, আদালতের নির্দেশনা পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিনা অপরাধে কাউকে হয়রানি করার সুযোগ নেই। তদন্তে যা আসবে সেই অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


এই সম্পর্কিত আরও খবর

আরও খবর

news image

আ.লীগের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শিগগিরই শুরু: চিফ প্রসিকিউটর

news image

পূজায় পুলিশের গুলি চুরি, ৩ আসামি রিমান্ডে

news image

কালচার অনেক সময় আইনের থেকেও বেশি গুরুত্ব পায় : গোলাম মাওলা রনি

news image

ইনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন নিয়ে শুনানি ১৪ অক্টোবর

news image

দুই ভাইসহ এস আলমকে গ্রেফতারে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির আদেশ

news image

যে কারণে পুলিশের সঙ্গে বিবাদে জড়ালেন কামরুল ইসলাম

news image

আদালত চত্বর থেকে পালিয়ে যাওয়া জোড়া খুনের আসামি গ্রেফতার

news image

ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক কাউন্সিলর আ.লীগ নেত্রী নার্গিস গ্রেফতার

news image

৯ দেশে জাবেদের ৬০২টি সম্পদ ফাইল উদ্ধার

news image

৮২ লাখ টাকা খুইয়ে সচিব জানলেন প্রতারিত

news image

শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি, দাবি স্টেট ডিফেন্সের

news image

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি: দাবি আইনজীবীর

news image

সাবেক ভূমিমন্ত্রীর বিদেশে সম্পদ অর্জনের ২৩ বস্তা নথি উদ্ধার

news image

খিলগাঁওয়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-সৈনিক লীগের তিন নেতা গ্রেপ্তার

news image

জবানবন্দিতে নাহিদ: 'রাজাকারের নাতিপুতি' বলায় শিক্ষার্থীরা অপমানিত বোধ করেছিলেন

news image

মুজিব-হাসিনা দুজনেই সেনাবিদ্বেষী ছিলেন: মাহমুদুর রহমান

news image

সাগর-রুনি হত্যা মামলায় তদন্ত দ্রুত শেষ করতে নির্দেশ

news image

আইন সংশোধন সংক্রান্ত কাজ ৩০ নভেম্বরের মধ্যেই সম্পন্ন করতে চায় সরকার

news image

১২১ বার পেছাল সাগর-রুনি হত্যা মামলার প্রতিবেদন

news image

প্রবাসীদের টার্গেট করে অভিনব প্রতারণা: বিয়ের প্রলোভনে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার ফাঁদ

news image

সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র: শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

news image

‘ছাগলকাণ্ডের’ সেই মতিউরকে অনৈতিক সুবিধা, ১১ পুলিশ সদস্য বরখাস্ত

news image

৮ বছরের শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা, সালিসে ১৫ হাজার টাকায় রফা

news image

৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচনে বাধা নেই : আপিল বিভাগ

news image

ধর্ষণের হুমকি দেওয়া আলী হুসেনকে ঢাবি থেকে বহিষ্কার

news image

আপিল বিভাগে অবকাশকালীন দুই বিচারপতি মনোনয়ন

news image

আ.লীগের মিছিলে ‘স্লোগান দিয়ে’ গ্রেপ্তার বাকপ্রতিবন্ধী সাইদের জামিন

news image

মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি / ৮ হাজার কোটি টাকা হাতিয়েছে স্বপনচক্র

news image

পাথর লুটপাট নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদনে ১০ সুপারিশ, এল জড়িতদের নাম

news image

মাই টিভির চেয়ারম্যান নাসিরের ৭ দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ