রবিবার ০৯ নভেম্বার ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বঙ্গাব্দ
ফিচার

ঈশান হতে অগ্নি

এম. এ. রাহাত ১১ নভেম্বার ২০২৪ ০৩:১৩ পি.এম

ঈশান হতে অগ্নি ছবি: এম. এ. রাহাত

প্রভু্ত্ববাদ নিয়ে দীর্ঘ যাপন আর চর্চা হুমকির থেকে কম নয়। আজকালকার সব প্রভুবাদী ব্যক্তিবর্গ এই মতবাদে বেশ অনড়। আমাদের এই ভক্তকুল সমাজ সহজ-সরল বিষয় এতো অতিরঞ্জিত করে যে, তাদের প্রভু খোদ বদহজমের অম্ল ঢেঁকুর তুলে প্রস্থান করতে ব্যাকুল হয়ে উঠে। সেই যাই হোক, প্রভুত্ববাদ সর্বোপরি ইতিবাচক মনোভাব প্রতিফলন করে না। কিছুক্ষেত্রে ফ্যাসিজমের নেশায় তা হালকা হয়ে যায় আর প্রভুর যখন শক্তি বিলুপ্ত হতে থাকে সেইসময় তার পাশে অন্ধ ভক্তকূল ব্যতীত কারও স্থান হয় না। তবে, শুরুতে যা বলেছি, আমাদের বর্তমান সমাজের প্রভুবাদীগণ বেশ সৌখিন ও অতি ভক্তি প্রদর্শন করেন। অবশ্য, কিছু ভক্তসমাজ এই ফাঁকে তারা নতুনরূপে অন্যসব পুরানো বা নতুন প্রভু নির্বাচনে ও সমর্থন প্রদানে বেশ সক্রিয়। অন্যদিকে, সংস্কারমনা ব্যক্তিত্ব ধারণকারীরা মেধা-শ্রম দিয়ে অসাধ্যকে সাধন করতে তীব্র প্রয়াসী। দিক থেকে দিগান্তের পথ উন্মোচন করা আর সেই পথ রক্ষিতভাবে পাড়ি জমানো বেশ দূর্বিষহ ব্যাপার। উত্তাল সমুদ্রে জীবন রক্ষার জন্য কিঞ্চিৎ মাটি খণ্ড (দ্বীপ) দৃষ্টিগোচর করা সহজলভ্য কাজ হলেও প্রতিকূল পরিবেশে সেখানে পৌঁছানো সন্দিহান বিষয়। তেমনভাবেই সমাজ ব্যবস্থার প্রতিস্থাপন আর প্রতিপালন কোন সহজ বিষয় নয়। আজ যেটা নেই, কাল সেইটা হবে, নইলে পরশু হবে। তবে, হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে বসে থাকা হিতাহিত জ্ঞানহীনতা ব্যতীত কিছুই নয়। অনুরূপ, বাস্তুতন্ত্রের একটি শাখা বিলুপ্ত হলে পুরো খাদ্যশৃঙ্খলের উপর যেমন প্রভাব পড়ে তদ্রুপ, আমাদের নীতিশাস্ত্র (Ethics) এবং নৈতিকতা (Morality) বাদী আর বিবাদীর পদপৃষ্ঠে পতিত হয়ে সমাজের সমস্ত অবকাঠামো (ন্যায়পরায়ণতা, নীতি ও নৈতিকতা, মুল্যবোধ, নিয়মানুবর্তিতা, সমাজতান্ত্রিকতা, দেশপ্রেম, সততা, সহমর্মিতা, সার্বভৌমত্ব, শিষ্টাচার ইত্যাদি) ভঙ্গুর করে ফেলে। প্লেটোর রাষ্ট্র দর্শনে, “মানুষ যেমন হবে রাষ্ট্রও তেমনিই হবে। মানুষের চরিত্র দ্বারাই রাষ্ট্র গড়ে উঠে।”

বিপ্লব কোন ঠুনকো বিষয় নয়, বিপ্লব কোন সহজলোভ্য পণ্যও নয় যে তাকে মানুষ হাটে-বাজার থেকে ক্রয় করে ব্যবহার করা যাবে। একটি জাতিকে বিপ্লবী হিসেবে তৈরি করতে হলে তাকে বড় কিছু বিসর্জন দিতে হয়। অথবা, কিঞ্চিৎ আবেগ এবং রক্তে পাগলাটে মনোভাব থাকা জরুরী। প্রভুবাদদের সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে, সেই দাবী আদায় করা চারটেখানি কথা নয়। সেইজন্য এর পিছনে মিশ্রিত থাকে অসংখ্য ত্যাগ ও বলিদানের গল্প। কিছু গল্প জানা যায় সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে। কিন্তু, সেই কল্যাণকর ক্ষেত্রগুলো কিছুসময় অকল্যাণকর হয়ে দাড়ায় স্বৈরাচারী এবং পুঁজিবাদী মনোভাবে আর তাদের উপস্থিতির দরুন স্বার্থে। একজন শাসক কতটা নির্বোধ, স্বেচ্ছাচারিতা, এবং স্বৈরাচারী জ্ঞান ধারণ করলে মিডিয়া প্রোপাগান্ডা, মিডিয়া শাসন করতে ব্যাকুল হয় তা কোন রাষ্ট্রে বিপ্লব এলেই বোধ করা যায়। বিশেষত, উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের নিম্নমধ্যবিত্ত, নিম্নআয়ের নাগরিক যেখানে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী, সেখানে তো প্যারামিটার ক্রস হয়ে হিমশিম অবস্থার জন্ম নেয়। একটি টেকসই ও মানসম্পন্ন রাষ্ট্র গড়ে তূলতে দৈহিক বিপ্লবের সাথে মনস্তাত্ত্বিক বিপ্লবের সাধন ঘটানোও অত্যন্ত জরুরী। একজন ব্যক্তি মানসিকভাবে উর্বর না হলে সেই বিপ্লব জাতির উদ্দেশ্যে ভাল কোন ফলাফল বয়ে আনতে পারে না। বরং তার এই কর্মযোগ্যের মাশুল দিয়ে যেতে হবে প্রতিটা প্রজন্মের। সেই বিশেষ ভুমিকার মধ্যে নিজেকে স্থগিত রাখা বুদ্ধিমানের লক্ষণ। তদ্রুপ, অভ্যন্তরীণ ও বহিঃরাগত অপশক্তির বিষয়ে তৎপর এবং জ্ঞান রাখা প্রগতিশীল নাগরিক ও রাষ্ট্রের উদাহরণ। সেই উদ্দেশ্যে, প্রতিটি বিশেষ ক্ষেত্রে সচেতনতা, বুদ্ধিবৃত্তির উদাহরণ বজায় রাখা বিশেষভাবে প্রয়োজনীয়। 

আমাদের জাতির মধ্যে একটি অন্যতম সমস্যা সর্বদা লক্ষণীয়। এই অন্তর্নিহিত সমস্যাটি সমতার গান, গল্প, ও কবিতা বলতে গিয়ে বৈষম্যের পথ পাড়ি জমানো। মুক্তিযুদ্ধের পিছনে অসংখ্য কারণ উল্লেখ করা যেতে পারে। তবে, সবগুলো কারণের মধ্যে আরেকটি নাম চিহ্নিত করে দেয়া যেতে পারে, বৈষম্য। তৎকালীন সরকারের (পশ্চিম পাকিস্তান) কাছে এই জাতির মানুষজন যেমন পদেপদে বৈষম্যের শিকার হয়েছে, নিপীড়িত হয়েছে, ঠিক এভাবেই বর্তমান ছাত্রসমাজ "কোটা ব্যবস্থা’র” কারণে ঠিক ঐ সমস্যারই সম্মুখীন হয়েছে। আর সেই উদ্দেশ্যে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যে ঐসময়ের (মুক্তিযুদ্ধকালীন পরিস্থিতি) মতোই দেশপ্রেমিকের ভূমিকাটা পালন করেছে। তবে, এই একটি বিপ্লবের প্রভাবে নিকটবর্তী এবং অর্ধনিকটবর্তী অসংখ্য ব্যক্তিবর্গ ও গোষ্ঠীর চিন্তা-চেতনা বর্তমান প্রজন্মের (যারা Gen-Z) দ্বারে প্রকাশিত করেছে। কিন্তু, প্রকৃতপক্ষে একটি বিতর্কমূলক তথ্য লোকসম্মুখে প্রকাশ করতে কিছু ব্যক্তিবর্গ কিঞ্চিৎ ভীতিগ্রস্ত বোধ করেন। তথ্যটি বাস্তবধর্মী এবং চিন্তাশীলমনা  ব্যক্তিবর্গের নিকট সহজভাবে বোধগম্য হতে পারে। এই যে একটি অভ্যুত্থান সমগ্র দেশ চাক্ষুষ করেছে, এর ফলে যে কত প্রকারের সুবিধাপন্থী, বিভিন্ন স্বেচ্ছাচারী গোষ্ঠীদের সনাক্ত করে গিয়েছে সেই বিষয়ে কয়জনই বা সচেতন মনে মন্তব্য করছে এই বর্তমান সমসাময়িকে? প্রশ্নের জবাবে “হ্যাঁবোধক” মন্তব্য অবশ্যই আসবে, তবে এর শতকরা অংশ অনেকটা হ্রাস পেয়েছে ৩৬ জুলাইয়ের চলমান আন্দোলনের তুলনায়। একদল সুশীল ঐদিনগুলোতে যা বলতে পারেন নি তার অপব্যাখ্যা পরিচিত গোষ্ঠীর বটবৃক্ষের আশ্রয়ে বলার চেষ্টা করছে। আবার কেউবা চাইছে নিজের ব্যক্তিগত প্রতিক্রিয়াই জনসম্মুখে তুলে ধরবার। কেউবা সাফাইয়ের নামে কিছু বিষয় অতিরঞ্জিত করে ফেলছে। কিন্তু, এসবের দায়-ভার কেউ নিতে প্রস্তুত নয়। আবার কেউবা যারা অন্যপক্ষের ছিল তারাও তাদের কর্তা বা প্রভুর নামজপতে বিগ্র ও ব্যস্ত। সেইটা পক্ষপাতী গোষ্ঠী এবং সমাজ করবে তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু, গঠনমূলক আলোচনা-সমালোচনা কতটুকু টেকসই হতে পারবে, এই প্রশ্নবোধক চিহ্ন কতটা ধর্ম জ্ঞানসম্পন্ন হবে তা ঊর্ধ্বগতি কিংবা নিম্নগতি বজায় থাকবে কিনা সেই প্যারামিটার সচল রাখাও সচেতন ও প্রগতিশীল ব্যক্তি-সমাজের জন্য আবশ্যিক। সংস্কারমুখী অমোঘ দ্বারপ্রান্তে একটি সুস্থ জাতি গঠনে বাঁধাপ্রদান এবং অপসংস্কৃতির প্রভাবে অপপ্রচার, বল প্রয়োগের তীব্র বাসনা আর ক্ষমতার প্রতি অধীর তৃষ্ণা এই সমস্তকিছু পণ্ড করা, সেই সাথে সংস্কারের নামে লোক দেখানো কার্যক্রম কপটতা ছাড়া কি-ই বা হতে পারে? 

আমাদের এক শ্রেণির জেন-জি (Gen-Z) চিন্তা-চেতনা অতি দুর্বল রেখে এখনও বেশকিছু ক্ষেত্রে আবেশে নিমজ্জিত। সদ্য স্বৈরাচারমুক্ত দেশটার পিছনে শ্রম এবং মেধা খাটানোর সময়ে কিছু ব্যক্তিবর্গ ও গোষ্ঠী নিদারুণ ভঙ্গীতে সোশ্যাল মিডিয়াতে হাস্যরসধর্মী বিনোদন বা মিমসের (Memes) মাধ্যমে ব্লাক লিস্ট করা কিছু ব্যক্তি এবং ঘটনাকে পজিটিভভাবে পার্সোনিফাই করতে মশগুল। এতে অবশ্য কিছু উদ্দেশ্য হাসিলকারী কুচক্র মহলের সরাসরি শক্ত ভুমিকা রয়েছে। এখানে তারাই বেশি অবদান রাখে যারা তাদের সহজাতধর্মী, বিশেষ অর্থে অপরাধ জগতের সাথে যারা জড়িত। সেইসব কালো ছায়ারূপী ব্যক্তিদের যেন বর্তমান প্রজন্ম (Gen-Z) সহজে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করতে পারে সেইটাই কায়েম করছে মিমসের (Memes) সহায়তায়। আর তাতে যে তারা কিছুটা সার্থক হয়েছে এটা নিঃসন্দেহভাবে বলা যেতে পারে। আমাদের সৃজনশীলতার অপব্যবহার সম্পর্কে যে ধারণা তারা এইরূপ সুযোগে উপস্থাপন করছে তা সমাজে আমাদের তরুণদেরকে মেধার দাবীদার হতে প্রশ্নবিদ্ধ করে। আমাদের জেন-জি’দের হতে হবে ঠিক তেমন যেমনটা প্রকৃত অর্থে প্রকাশ পেয়েছে আন্দোলনে, ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টে , কুচক্রী মহল থেকে রাতে এলাকার নিরাপত্তা বহাল রাখতে, বাজার মনিটরিং এবং বন্যার সময় যেভাবে একজোট হয়ে ফান্ড রেইজসহ ত্রাণ প্রদান করা হয়েছে এমন কর্মযজ্ঞে অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির মাধ্যমে। নিষ্পত্তি লাভে তরুণদেরকে কেন সচেতন থাকতে হবে সেই কারণ বেশ সহজ ও যুক্তিযুক্ত। 
বিশেষ করে, আন্দোলনে অংশ নেয়া কিংবা ভার্চুয়ালভাবে সঙ্গ দেয়া কিছু সুদর্শন প্রতিমূর্তিদের আমলনামা ধীরেধীরে লোকচক্ষুর আড়াল হতে প্রকাশ পাচ্ছে, এবং পাবেই। আমরা যখন আন্দোলনে অবস্থানরত ছিলাম এবং এই বাড়তি বিষয়ে যখনই কথা বলতাম কিছু বাছাইকৃত শ্রেণির দ্বারা উদ্দেশ্যপূর্ণ কটাক্ষের শিকার হতাম বারংবার। ঠিক তখনই এটা পরিষ্কারভাবে উপলব্ধি করেছিলাম যে ভবিষ্যতে অর্থাৎ এই স্বাধীনতার পর বর্তমানে কী ঘটতে পারে বা কী ঘটতে যাচ্ছে। এই ধারণা সম্বন্ধে সচেতন সমাজ হয়তো বেশ অবগত। এমনকি সংবাদ মাধ্যমগুলোর বর্তমান রেফারেন্স দেখে তেমনটাই বোধ করি। এই ব্যাপারে জনপ্রিয় বেশকিছু প্রিন্ট মিডিয়া ছাড়াও অন্যান্য প্রিন্ট মিডিয়া এবং টিভি চ্যানেলগুলোর সরব ভূমিকা বেশ অপরিহার্য। কিন্তু, তাদের কর্তব্য, এই ভূমিকাগুলো রাজনৈতিক দল ক্ষমতা পাবার পরেও জিয়ে রাখা, মুক্ত সাংবাদিকতা টেকসইকরণ সেই সাথে সমাজের ভিড়ে হলুদ সাংবাদিকতা তিরস্কৃতকরণে বাস্তবায়ন অতীব জরুরী। প্রকৃত দেশপ্রেমিকেরা যে যতবার দেশটাকে স্বৈরতন্ত্রের ছায়া থেকে রক্ষার জন্য স্রষ্টার উদ্দেশ্যে হাত উত্তোলন করেছে, ঠিক ততবার এটাও চেয়েছে যেন অন্যসব কট্টরপন্থী, সুবিধাপন্থীদের ছত্রছায়ার থেকেও তিনি আমাদের সুরক্ষা প্রদান করেন এবং সাহস-জ্ঞান ও বিচার-বিচক্ষণতা দান করেন। অন্তরে একধরণের শুদ্ধাচারণ এবং বাহিরে নাশকতার ন্যায় অসংখ্য অপরাজনৈতিক কাজে লিপ্ত এমন ব্যক্তি হতে সুরক্ষিত থাকতে আমাদের নিরব না থেকে উর্বরমস্তিষ্ককে কাজে লাগাতে হবে, ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, এবং সনাক্তকরণে মনোনিবেশ করতে হবে। সাধুরূপী ভণ্ড শ্রেণির ব্যক্তিবর্গ ও গোষ্ঠীদের মুখোশ ফাঁস করতে সোচ্চার থাকতে হবে, ঐক্যতা বজায় রাখতে হবে পূর্বের ন্যায়। পুনরায় অগ্রসর হতে হবে অহমবোধ ত্যাগ করে এবং নিজেদেরকেই সম্মুখসারীতে অবস্থান করতে হবে। যোগ্য ব্যক্তিকে সনাক্তকরণে ধাপে ধাপে কায়েম করতে হবে অনুসন্ধানের সমস্ত প্রক্রিয়া। তবে, যতক্ষণ না নিজের প্রতি শুদ্ধাচরণ বজায় রাখা যায় ততক্ষণ পর্যন্ত সেই পালের গরু হওয়া ছাড়া আর পথ থাকে না। এছাড়া আরও জরুরী তাদের (ভণ্ডদের) বিরুদ্ধে শিরদাঁড়া দণ্ডায়মান রাখার পাশাপাশি প্রতিহত করার লক্ষ্যে সাহস সঞ্চার করা। নয়তো আসছে দিন হতে পারে আরো ভয়ঙ্কর। 

ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি সুন্দর দেশের প্রতি অধির আকাঙ্ক্ষায় থাকবে এই তরুণ সমাজের নিকট। আর এইজন্য প্রয়োজন প্রকৃত মেধা এবং সৎ উপায়ে শ্রম বিনিয়োগ। সেইটা যে শুধু ডিগ্রিধারণের মাধ্যমেই অর্জন করতে হবে তা কিন্তু নয়। আমাদের মেধাবী হতে হবে সম্মুখসারীতে নেতৃত্ব দেয়ার লক্ষ্যে পারিপার্শ্বিক যত জ্ঞান অর্জন করা যায় সমস্তকিছু লুফে নেয়ার মাধ্যমে, এবং নজরে রাখতে হবে অভ্যন্তরীণ ও বহির্বিশ্বের ঘটনা ও সম্পর্ক। যেই বিষয়টা হাতের নাগালে মনে হবে সেইটাকেও চেষ্টা করার শক্ত ইচ্ছাবোধ রাখতে হবে। আলস্য ত্যাগ করতে হবে। বিশেষ করে ইতিহাসের প্রতি অনিহা কিংবা অলসতা দূরে রাখতে হবে এবং একজন বক্তার বক্তব্য ক্রস-এক্সামিন করার ধৈর্য ও ইচ্ছাপোষণ করতে হবে। তার সকল মন্তব্যের জোরালো সমর্থন পোষণ করা উচিত নয়। সেই উদ্দেশ্যে, প্রয়োজন বোধ করলে গবেষণা করতে হবে কিছুটা সময় ব্যয় করার মাধ্যমে। যার ফলে সত্যতাযাচাইয়ের পাশাপাশি অভ্যস্ত ও ব্যায়াম সাধন করাও যাবে উর্বর মস্তিষ্কের। বলা বাহুল্য, একটি জাতি তার ইতিহাস যত দ্রুত ভুলে যাবে তার জন্য ততই কষ্টপোহাতে হবে অগণিত। সেইসাথে যে জাতি ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে পারে না, অপরের সুঅবস্থান এবং দুরাবস্থার সাক্ষী হয়েও সময়ের সাথে সমস্তকিছু ভুলে যায়, সত্য ও অসত্য অস্বীকার করে তার জন্য অপেক্ষা করবে ভয়ঙ্করতম বেদনা, উপহাস আর অসম্মান। কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর সংকল্প কবিতায় যুগ-যুগ পূর্বেই বলে গেছেন, “বিশ্ব-জগৎ দেখব আমি আপন হাতের মুঠোয় পুরে।।” যে সময়ে একটি কম্পিউটারের সুযোগই ছিল না আর নেটওয়ার্ক তো দূরের কথা। সেই অগ্রগামী কবির কথা বাস্তবায়ন খুব যে কষ্টসাধ্য তা নয়। আজ ইন্টারনেটের এই যুগে শুধু একটি ক্লিকেই এক মুহূর্তে অসংখ্য তথ্য সামনে এসে হাজির আর সেই তথ্যগুলো ক্রস চেক করার জন্যও অসংখ্য বিশ্বাসযোগ্য ওয়েবসাইট বিদ্যমান। এই অস্ত্রটি আমাদেরকেই সঠিক জায়গায় সঠিক কাজে ব্যবহার করতে হবে। ইন্টারনেটের আসল শক্তি তুলে ধরতে হবে। এই তারুণ্য মিছে নয়, পিছে নয়। এই তারুণ্য সজীব অগ্রগামী, এই তারুণ্য নির্ভীক, মনে চঞ্চল আর উদ্দাম। এই তারুণ্য কমল তবে চাইলে করে দমন। এই তারুণ্যের জয় হোক, আসুক শান্তি, ছড়িয়ে পড়ুক অবলীলায়।

ঈশান হতে অগ্নি
লেখক: এম. এ. রাহাত

 


এই সম্পর্কিত আরও খবর

আরও খবর

news image

রাজনীতি, বুদ্ধিজীবী ও টকশো-সংস্কৃতি: বিভ্রান্ত এক দেশ

news image

পেশা নয়, সেবা—এটাই হোক রাজনীতি

news image

যেসব লক্ষণে বুঝবেন আপনার থেরাপি প্রয়োজন

news image

ইসলামিক রাজনীতি বনাম গণতান্ত্রিক রাজনীতি: মুসলমানদের অন্তর্দ্বন্দ্ব

news image

শারীরিক ও মানসিক সুস্থ থাকতে দরকার আলিঙ্গনের

news image

সঙ্গী নার্সিসিস্ট কি না চিনবেন যেভাবে

news image

৬ উপসর্গে এআই নয়, চাই সরাসরি চিকিৎসক

news image

এসিতে বিস্ফোরণ? এই ৫টি সংকেত কখনোই উপেক্ষা করবেন না!

news image

যেভাবে বুঝবেন আপনার বিশ্রাম দরকার

news image

বছরের শেষ সূর্যগ্রহণ আজ

news image

৪৩০ জনকে নিয়োগ দেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, লাগবে এসএসসি পাস

news image

বাংলাদেশের স্বৈরতন্ত্রের ইতিহাস ও পি আর পদ্ধতির প্রযোজ্যতা

news image

জাপানিদের দীর্ঘ ও সুখী জীবনের রহস্য

news image

"একাত্তরের অর্জিত নামমাত্র স্বাধীনতা"

news image

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শকে বিতর্কিত করতেছে কারা?

news image

সোলো ট্রিপের জন্য ঘুরে আসুন এই ৫টি দেশে

news image

পুরো মানুষ গিলে ফেলতে সক্ষম যে ৬টি ভয়ংকর প্রাণী

news image

চন্দ্রগ্রহণ খালি চোখে দেখা কি নিরাপদ?

news image

খোলা চিঠি

news image

দামাল কবির জন্মদিনে শ্রদ্ধা জানিয়ে মঞ্চে আবারো ‘দামাল ছেলে নজরুল’

news image

তারেক জিয়ার উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি

news image

রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রীয় নির্বাচন ব্যবস্থা!

news image

দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের প্রয়াণ দিবসে সুরেলা সন্ধ্যা

news image

রবিন রাফানের এআই মাস্টারক্লাসে অভূতপূর্ব সাড়া, দ্বিতীয় সিজনের ঘোষণা

news image

যেভাবে অনলাইনে ভাইরাল হওয়া কারওয়ান বাজারের তরমুজ বিক্রেতার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ালো

news image

ঈদ সালামি থেকে ঈদী: সংস্কৃতির বিবর্তন

news image

সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে ৪০০ বছরের পুরোনো মসজিদ

news image

শিশু সাহিত্যের ধ্রুবতারা শিবুকান্তি দাশ

news image

জনতার কন্ঠস্বর

news image

বাংলাদেশের ঐতিহাসিক পাঁচ মসজিদ